বোরো ধানের নায্যমূল্য নিশ্চিত হওয়ায় পাল্টে যাচ্ছে দেশের আমন আবাদের চিত্র। বাড়তি জমিতে আবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। পাশাপাশি আমন বীজে নগদ ভর্তুকি আর বিনামূল্যে সেচ সুবিধাও দিচ্ছে সরকার। এমনকি প্রতিকেজি ডিএপি সারের দাম কমানো হয়েছে নয় টাকা পর্যন্ত। আর এতেই আমন উৎপাদনে এবার রেকর্ডের সম্ভাবনা দেখছেন মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা। গাজীপুর ঘুরে এসে রিপোর্ট করছেন শুভ খান।
করোনাকালে বোরোর বাম্পার ফলন খাদ্য নিরাপত্তায় দিচ্ছে খানিকটা স্বস্তি। ভালো ফলনের পাশাপাশি ন্যায্য দামও পেয়েছেন কৃষকরা। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়তে যাচ্ছে আমন মৌসুমে।
মাঠ পর্যায়ে গিয়ে দেখা গেলো বিএডিসির বীজ বিপনন কেন্দ্রে কৃষকদের দীর্ঘলাইন। প্রথমবারের মতো সরকারের দেয়া নগদ ভর্তুকিতে বীজ কিনছেন কৃষকরা। বিএডিসি বলছে, প্রতিকেজি দেশীয় বীজে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে ১০ টাকা। আর হাইব্রীডে ভর্তুকি দেয়া হচ্ছে কেজিতে ৫০ টাকা। এ বছর বিএডিসির মাধ্যমে প্রায় ২০ কোটি টাকা বীজে ভর্তুকি দিচ্ছে সরকার।
একজন কৃষক জানান, আগে তিনি এক বিঘা জমিতে চাষ করতেন। এখন নতুন এই বীজ আসার ফলে তিনি ৫ বিঘা জমিতে চাষের উদ্যোগ নিয়েছেন। সেই লক্ষ্যেই বীজ সংগ্রহ করেন। এসময় বীজ কিনতে আসা আরেক কৃষক জানান, বীজের দাম ১০ টাকা কম হওয়া এবং ভালো ফলনের আশ্বাস মেলায় তিনিও বীজ সংগ্রহ করেছেন।
স্থানীয় ডিলার ও বিএডিসির কর্মকর্তারা বলছে, গেলবারের তুলনায় বীজ বিক্রি বেড়েছে কয়েকগুণ। ভর্তুকিতে নয়ছয় বন্ধে ডিলারদের উপর নজরদারির কথা জানালেন এই কর্মকর্তা।
বিএডিসির বীজ বিপণন বিভাগের সিনিয়র সহকারী পরিচালক ড. মো. সাইদুল ইসলাম সময় সংবাদকে জানান, চাষীদের তালিকা করে বীজ বিক্রি করা হচ্ছে। যে কোনো ধরনের দুর্নীতি এড়াতে চাষির জাতীয় পরিচয়পত্র, মোবাইল নম্বর এবং স্বাক্ষর নেয়া হচ্ছে।
জানা গেছে গত বছরের তুলানায় এ বছর ৮ থেকে ৯ টন বীজ বেশি বিক্রি হচ্ছে। আগামী মৌসুমে ৫৯ লাখ হেক্টর জমিতে আমনের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১ কোটি ৫৪ লাখ টন। যা গত মৌসুমের চেয়ে ১২ লাখ টন বেশি। তবে, কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে আমন উৎপাদন।
বিএডিসি বলছে, ইতোমধ্যে ডিএপি সারের দাম কেজিতে ৯ টাকা কমিয়ে ১৬ টাকা করা হয়েছে। সরকারি সেচ প্রকল্পের আওতাধীন এলাকায় বিনামূল্যে সেচ সুবিধা পাবেন কৃষকরা।
বিএডিসি চেয়ারম্যান সায়েদুল ইসলাম সময় সংবাদকে জানান, মেঘনা-ধানগোদা প্রজেক্ট, জিকে প্রজেক্ট তারাও যেন কৃষকদের সেচ দেয়। সেই টাকা সরকার দিয়ে দেবে। সরকার সেচ মূলত ফ্রি করে দিয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় বলছে, আমনের পাশাপাশি রবি শস্য আবাদেও সরকারি সহায়তা অব্যাহত থাকবে কৃষকদের জন্য।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস